-22%

ঈশপের গল্প (NEW)

Original price was: 350৳.Current price is: 273৳.

Add to Wishlist
Add to Wishlist

Description

ঈশপ প্রাচীন গ্রিসের একজন কথক বা গল্পবলিয়ে। শত শত বছর ধরে তাঁর গল্প বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষায় প্রচলিত। অনেকের মতে, ঈশপ হলেন আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ। বাড়ি ইথিওপিয়ায়। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব ৬২০ সালে তাঁর জন্ম। মৃত্যু খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৪ সালে। ছোট ছোট গল্পের মাধ্যমে ভালো ও মন্দের পরিণতি তুলে ধরেছেন তিনি। বিশ্বের প্রায় সব দেশে ‘ঈশপের গল্প’ দারুণভাবে সমাদৃত। কেবল মানুষই নয়, বিভিন্ন ধরনের পশুপাখি তাঁর গল্পের চরিত্র। তাঁর লেখা কোনো পাণ্ডুলিপি পাওয়া না গেলেও লোকমুখে যুগ যুগ ধরে টিকে আছে গল্পগুলো। তাঁর জীবন সম্পর্কে খুব কম তথ্যই পাওয়া গিয়েছে। এটা ঠিক যে তার বলা গল্পগুলোকে পাশ্চাত্যের প্রথম নীতিকথা হিসেবে ধরা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, তিনি একজন দাস ছিলেন এবং তাঁর গল্প বলার দারুণ ক্ষমতার জন্য তাঁকে মুক্তি দেয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি এক রাজার উপদেষ্টা হিসেবে যোগদান করেন। ঈশপ নিজে কখনো তাঁর জীবন সম্পর্কে কোনো কিছু লিখে যাননি; তিনি শুধু মৌখিক বর্ণনা দিয়ে গিয়েছেন। বিভিন্ন পুরোনো তথ্য থেকে জানা যায় তাঁর জীবন সম্পর্কে। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের বর্ণনা অনুযায়ী ঈশপ কৃষ্ণ সাগরের কাছে থ্রেস নামক জায়গায় জন্মেছিলেন। আবার রোমান গল্পকার ফ্রিডাসের ভাষ্যমতে ঈশপ জন্মেছিলেন ফ্রিজিয়াতে। তবে তাঁর জীবন সম্পর্কে প্রথম যে তথ্য পাওয়া যায় তা তাঁর মৃত্যুর একশ বছর পর প্রকাশিত হয়েছিল বিখ্যাত গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডটাসের একটি লেখায়; যেখানে তিনি বর্ণনা দেন যে, ঈশপ ল্যাডমন অব সামোসের দাস ছিলেন এবং ডেলফিতে মারা যান। অপর আরেক গ্রিক ইতিহাসবিদ প্লুটার্ক ঈশপ সম্পর্কে বলেছিলেন যে, তিনি লিডিয়ার রাজা ক্রিসাসের উপদেষ্টা ছিলেন। কিন্তু জার্মান পণ্ডিত মার্টিন লুথার ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন; তাঁর ভাষ্যমতে ঈশপের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। এ ছাড়াও এরিস্টোফেনিস, জেনোফন, প্লেটোসহ আরো অনেক লেখক ঈশপের জীবন সম্পর্কে তাঁদের লেখাতে বর্ণনা করে গিয়েছেন। মূলত ‘ঈশপ’ নামকরণ এসেছে গ্রিক শব্দ ‘ঈথিওপ’ (Aethiop) শব্দ থেকে, যার অর্থ ঈথিওপিয়া। তা ছাড়া তাঁর গল্পের ভেতর যেভাবে বিভিন্ন প্রাণীর ধূর্ততার কথা উঠে এসেছে, তাতে অনেক পণ্ডিতের মতে ঈশপ আফ্রিকা থেকে এসেছেন। ঈশপ সম্পর্কে আরো অনেক মজার তথ্য আছে। যেমন, তার ভাস্কর্যগুলো দেখে অনেকের মনে ধারণা তৈরি হয়েছে যে, তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন; আবার এমনও তথ্য পাওয়া যায় যে, তিনি নাকি একবার প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন, কিন্তু এক দেবতার সাহায্যে তিনি সুস্থ হয়ে যান। ইতিহাস বলে যে, তিনি তাঁর বোকামি এবং শ্রদ্ধাহীনতার জন্য যেসব শাস্তি পেয়েছিলেন, সেগুলো থেকে তিনি তাঁর কথা এবং চালাকির প্যাঁচ দিয়ে পার পেয়ে যেতেন। তিনি জনসম্মুখে বক্তৃতা দেবার সময় সেসময়কার রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতেন এবং সেখানেও তাঁর কথার জাদু দিয়ে সবাইকে আকৃষ্ট করতেন। তাঁর জনপ্রিয়তার জন্য আজ যেসব গল্পের কোনো লেখক নেই বা অভিপ্রায়বিশিষ্ট কিংবা রূপক কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বোঝানোর সময় ‘ঈশপীয়’ (Aesopic) শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ঈশপের গল্পে নরত্বারোপ খুব সাধারণ একটি ব্যাপার। খুব বিখ্যাত গল্পগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ‘কচ্ছপ এবং খরগোশ’-এর কাহিনি, যেখানে একটি শ্রমশীল কচ্ছপ এবং একটি অনলস খরগোশ দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। অহংকারী খরগোশটির মনে এত বেশি আত্মবিশ্বাস ছিল যে, অর্ধেক পথ এসে সে বিশ্রাম নিতে আরম্ভ করল; ওদিকে পরিশ্রমী কচ্ছপ তাকে পাশ কাটিয়ে জিতে গেল। গল্পের নীতিকথা এটাই যে, ‘ধীরে সুস্থে এগোলে সাফলতা পাওয়া যায়।’ এরকম আরো অনেক নীতিকথা ঈশপের গল্পে পাওয়া যায় যেমন, ‘শিয়াল এবং আঙুর ফল’ গল্পটিতে দেখা যায় যে, এক শিয়াল বনে হাঁটতে গিয়ে একটা গাছে আঙুর ফল দেখার পর লোভ জন্মায়। বহু চেষ্টা করেও যখন তা নাগালে পায়নি, তখন সে মনের দুঃখে চলে যেতে যেতে বলল, ওগুলো আসলে টক। আজ ‘আঙুর ফল টক’ কথাটা এই কাহিনি থেকেই এসেছে। পশুপাখিদের নিয়ে গল্প বলার ছলে তিনি মূলত মানুষের নৈতিক চরিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। মানুষের বিবেক ও নীতিবোধকে জাগিয়ে তোলাই ছিল তাঁর গল্পের মূল বৈশিষ্ট্য। ঈশপের গল্পের প্রথম লিখিত সংকলন প্রকাশ করেন ডিমিট্রিয়াস অব ফেলেরন আনুমানিক ৩২০ খ্রিস্টপূর্বে। বইটির নাম দেয়া হয়েছিল ‘ঈশপের গল্পের সংকলন’ (Assemblies of Aesopic Tales)। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল তা নবম শতাব্দীতে হারিয়ে যায়। ধারণা করা হয়, গল্পগুলোর প্রথম বিদ্যমান সংস্করণ প্রকাশ করেন ফ্রিডাস, যিনি কিনা মেসেডোনিয়ার একজন সাবেক দাস ছিলেন। তিনি খ্রিস্টাব্দ প্রথম শতাব্দীতে গল্পগুলোকে ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করেন, যা পরবর্তীতে ‘রমুলাস সমগ্র’ হিসেবে পরিচিতি পায়। ২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যভাগে রোমে বসবাসরত ভ্যালেরিয়াম ব্যাবরিয়াস নামক একজন গ্রিক বাসিন্দা এই গল্পের সংকলনসহ সেসময়কার কিছু গল্পকে গ্রিক ভাষায় অনুবাদ করেন। তার মধ্য থেকে ৪২টি গল্প এভিয়ানাস ৪০০ খ্রিস্টাব্দে ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করেন। এ ছাড়াও আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, ইসলাম ধর্মের সাথে ঈশপের একটি যোগসূত্র রয়েছে। নবী করিম হজরত মুহম্মদ (স.) পবিত্র কোরান শরীফের ৩১তম সুরায় ‘লোকমান’ নামক একজনের কথা বলেছেন, যিনি ধারণা মতে, প্রাচ্যের সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন। আরব লোকগল্প অনুযায়ী, লোকমান সম্ভবত ১১০০ খ্রিস্টপূর্বে বেঁচে ছিলেন, এবং তিনি একজন ইথিওপিয়ান ছিলেন। এটা বলা হয়ে থাকে যে, তাঁর বাবা বাইবেলে উল্লিখিত যবের বংশধর। তিনি মারা যাবার পাঁচ শতাব্দী পর তাঁর কিছু কাহিনি ঈশপ অভিযোজন করেছিলেন। ঈশপের মৃত্যু নিয়েও রয়েছে নানা জনের নানা মত। পুরাণ অনুযায়ী, তিনি তাঁর কাহিনির জন্য গ্রিস জুড়ে বিখ্যাত ছিলেন এবং সে কারণেই তিনি অনেকের কাছে হিংসা বা বিরক্তির পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। আবার অনেকের মতে, তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের শিকার হয়ে মারা যান। তাঁকে ডেলফিতে দেবতা অ্যাপোলোর মন্দির থেকে একটা সোনার কাপ চুরির অভিযোগে বন্দি করা হয় এবং পরবর্তীতে শাস্তিস্বরূপ পাহাড়ের চূড়া থেকে ফেলে দেয়। কিন্তু অনেকের মতে, শত্রুপক্ষের লোকেরা তাঁর ব্যাগের ভেতর কাপটি লুকিয়ে রাখে এবং এই ষড়যন্ত্রই ঈশপের জীবনে করুণ পরিণতি ডেকে আনে। নূর-ই-মোনতাকিম আলমগীর ০১-০৮-১৮

Additional information

Cover

Condition

Language

Publisher

Author

, ,

ISBN

Edition

Pages

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “ঈশপের গল্প (NEW)”

Your email address will not be published. Required fields are marked *