হিটলার
byসৈয়দ মুজতবা আলী
"হিটলার"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: হিটলারের প্রেম ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ১ মে জার্মনির জনসাধারণ পেল তার মােক্ষমতম শ—যেন দেশবাসী আবালবৃদ্ধবনিতার মস্তকে স্বয়ং মুষ্টিযােদ্ধা ক্লে একখানি সরেসতম ঘুষি মেরে তাদের সবাইকে টলটলায়মান পরপড়ায়মান করে দিলেন। ঘুষিটা এল হামবুর্গ বেতারকেন্দ্র থেকে ইতােমধ্যে মিত্রশক্তি আকাশ থেকে জর্মনির বৃহৎ বেতারকেন্দ্রগুলাে, বিশেষ করে শর্টওয়েভের প্রায় সবগুলােকেই খতম করে দিয়েছেন। | বেতারে তখন সংগীতের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। সেই অনুষ্ঠান ক্ষণতরে বন্ধ করে বলা হল, আপনারা একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য তৈরি থাকুন’ কিছুক্ষণ পরেই বেতারে ঘােষিত হল, আমাদের ফুরার আডলফ হিটলার ইহলােক ত্যাগ করেছেন। | এরপর যে শষ্টা পেল সেটা তাদের খুলি ভেঙে দিল না বটে, কিন্তু মাথার মগজ দিলে ঘুলিয়ে। যেন ওমলেট বানাবার কল ব্রেনবক্সটার মধ্যিখানে তুর্কিনাচন লাগিয়ে দিলে। | হিটলার মৃত্যুর চল্লিশ ঘণ্টা পূর্বে শ্রীমতী এফা ব্রাউন নাম্নী—তাবৎ জর্মনদের কাছে অজানা অচেনা এক কুমারীকে বিয়ে করেছিলেন। সমস্ত জৰ্মনি যেন বুদ্ধিভ্রষ্ট-জনের মতাে একে অন্যকে শুধালাে, সে কী! গত বারােটি বৎসর ধরে যে ফুরারের ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছিল, সে তাে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর ছবি। যিনি সুখময় নীড় নির্মাণ করেননি, বল্লভার সন্ধান করেননি, এমনকি বংশরক্ষা করে উত্তরাধিকারীরূপে কাউকে স্বহস্তনির্মিত ফ্রেডারিক দ্য গ্রেটের সিংহাসন বিনিন্দিত সহস্ৰায়ু রাইষের (নাৎসি রাজ্যের) সিংহাসনে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করতে চাননি। অথচ তিনি কী ভালােই-না বাসতেন শিশুদের—যখনই জনসাধারণের সঙ্গে মিশবার সুযােগ পেয়েছেন, তখনই দেখেছি তিনি কী হাসিমুখে শিশুদের আদর করে বাহুতে তুলে নিয়েছেন, তাদের মাতাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন, দেশের শ্রেষ্ঠা নর্তকী, অভিনেত্রী, নায়িকা, সুন্দরীদের জন্মদিনে তাঁদের বাড়িতে দেশি-বিদেশি বিরল ফুলের স্তবক পাঠিয়েছেন। প্রােপাগান্ডা মন্ত্রী গ্যোবেলস আমাদের বেতারে কতশত বার বলেছেন, এই সন্ন্যাসীর হৃদয়কন্দরে কিন্তু নিভৃতে বিরাজ করেন সৌন্দর্যের দেবতা। এ তপস্বী সেই বিশ্বকল্পনাময়ী চিন্ময়ীর উপাসক। সে চায়, নিভৃতে নির্জনে একাগ্র মনে
লেখক | : | সৈয়দ মুজতবা আলী |
প্রকাশনী | : | বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র |
বিষয় | : | ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব |
সংস্করণ | : | 2014 |
কভার | : | hardcover |
ISBN | : | 9841800748 |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | : | 150 |